২০ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৪৩ অপরাহ্ন, ২৮শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, বৃহস্পতিবার, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
চুয়াডাঙ্গায় ৩ তক্ষকসহ গ্রেফতার ১জন বাবুগঞ্জ এলজিইডি’র এলসিএস কমিউনিটি অর্গানাইজার সানজিদার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও হয়রানির অভিযোগ জোটের চাপ নাকি অভ্যন্তরীণ কোন্দল? বরিশাল -৩ আসনে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি বিএনপি। ভোটারদের মাঝে ‘ভিআইপি চমক’-এর গুঞ্জন বাবুগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস এর ৫০ বছর পূর্তীতে ঝালকাঠি জেলা জাসাসের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাংলাবান্ধায় ভারসাম্যহীন নারী গণধর্ষণেন শিকার চার ধর্ষক আটক বাবুগঞ্জে ছাত্রদল নেতা হত্যাকাণ্ড: ২১ জনের নামে মামলা! দর্শনায় দাড়ানো ট্রাকে আগুন ধরিয়েছে দুর্বৃত্তরা বিরামপুর রেলস্টেশনে ট্রেনের যাত্রা বিরতির দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের বড় বোনের ইন্তেকাল
বাসা বা বাড়ি থেকেই করোনা পরীক্ষা করানো যাবে মাত্র ৫০০টাকায়। আজকের ক্রাইম-নিউজ

বাসা বা বাড়ি থেকেই করোনা পরীক্ষা করানো যাবে মাত্র ৫০০টাকায়। আজকের ক্রাইম-নিউজ

অনলাইন ডেস্ক:: বাসা বা বাড়ি থেকেই করোনা সংক্রমনের সন্দেহ হলে পরীক্ষা করানো যাবে- সাধারণ মানুষের জন্য সুবিধাটি দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। তবে এভাবে নমুনা পরীক্ষা করাতে গেলে নির্ধারিত ফি দিতে হবে।
সরকারি হাসপাতাল ও বুথে গিয়েও নমুনা পরীক্ষা করানো যাবে আগের মতো। দুই ক্ষেত্রেই ফি দিতে হবে। এখন পর্যন্ত সরকার বিনা পয়সায় এই স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে আসছে। কর্মকর্তারা বলছেন, বিদেশ থেকে আমদানি করা প্রতিটি কিটের দাম পড়ছে তিন হাজার টাকা।

যদি বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়, সে ক্ষেত্রে সব মিলিয়ে একটি পরীক্ষার পেছনে সরকারের মোট খরচ পড়ে যায় পাঁচ হাজার টাকার মতো। তাই ফি যেটা নেয়া হবে তাকে নামমাত্রই বলতে চাইছে কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে,সরকারি হাসপাতাল ও বুথে গিয়ে নমুনা পরীক্ষা করালে ফি দিতে হবে ২০০ টাকা। আর বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করালে ৫০০ টাকা ফি দিতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নিয়ে এই ফি নির্ধারণ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করবে বলে জানা গেছে।

চলতি সপ্তাহেই প্রজ্ঞাপন জারি

জানতে চাইলে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, ‘কারো শরীরে করোনাভাইরাস আছে কি না, তা জানার জন্য আমরা এখন যে নমুনা পরীক্ষা (আরটি-পিসিআর টেস্ট) করছি, তাতে কোনো টাকা নেওয়া হয় না।

তবে নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রে আমরা একটি ফি নির্ধারণ করেছি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। আশা করছি, চলতি সপ্তাহের মধ্যে ফি নির্ধারণ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।’

করোনা পরীক্ষার জন্য কেন ফি নির্ধারণ করা হচ্ছে—এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, দুই কারণে ফি নির্ধারণের পথে হাঁটছে সরকার।

একাধিক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, করোনার কারণে সরকারের আয় কমে গেছে। একেকটি নমুনা পরীক্ষার পেছনে যে টাকা খরচ হয়, বাংলাদেশের মতো দেশে এটি দুই থেকে তিন মাস বিনা মূল্যে করা সম্ভব। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে সম্ভব নয়।

দেশে যে হারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদে নমুনা পরীক্ষা করতে হবে। এ জন্য সরকার একটি ফি নির্ধারণ করতে যাচ্ছে। দ্বিতীয় কারণ হলো, নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে এর অপব্যবহার হচ্ছে।

অনেকের শরীরে করোনার উপসর্গ না থাকলেও সন্দেহ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা করাচ্ছে। সন্দেহ হলে পরীক্ষা নিরুৎসাহ করার জন্যও সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।

প্রতিটি কিটের দাম তিন হাজার টাকা

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, বিদেশ থেকে আমদানি করা প্রতিটি কিটের দাম পড়ছে তিন হাজার টাকা। যদি বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয়, সে ক্ষেত্রে সব মিলিয়ে একটি পরীক্ষার পেছনে সরকারের মোট খরচ পড়ে যায় পাঁচ হাজার টাকার মতো।

প্রতিদিন গড়ে ১২ হাজার থেকে ১৪ হাজার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে শনাক্তের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার। বাকিদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে না। এতে সরকারের বিপুল পরিমাণ টাকা অপচয় হয়।

সে জন্য যাদের শরীরে করোনার উপসর্গ আছে এবং কেউ যদি মনে করে করোনার উপসর্গ থাকার আশঙ্কা প্রবল সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তি নমুনা পরীক্ষা করাতে যাবে।

তবে পাশের দেশ ভারত, পাকিস্তান, নেপাল এবং আফ্রিকার দেশগুলোতে এখনো তাদের নাগরিকদের বিনা মূল্যেই করোনার নমুনা পরীক্ষা করে যাচ্ছে। ভারতে সরকারি হাসপাতাল ও ল্যাবে করোনা পরীক্ষায় কোনো টাকা নেওয়া হয় না।

বেসরকারিভাবে সাড়ে চার হাজার টাকা নেওয়া হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বেশি বেশি পরীক্ষার ওপর জোর দিয়েছে। কারণ পরীক্ষা বেশি হলে করোনা রোগী শনাক্ত সহজ হয় এবং তাকে আইসোলেশনে নেওয়া যায়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, সরকারি হাসপাতালে গিয়ে নমুনা পরীক্ষার ফি নির্ধারণ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নিতে গত সপ্তাহে চিঠি পাঠানো হয়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সিরাজুন নূর চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘করোনার নমুনা পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রস্তাব পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা আমাদের মতামত জানিয়েছি।’

বিনা মূল্যে পরীক্ষার সুযোগে অপব্যবহার?

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, বর্তমানে সারা দেশে ৬৬টি ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর মধ্যে ৪৮টি সরকারি, ১৮টি বেসরকারি। প্রতিদিন যে পরিমাণ নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে, তার প্রায় ৯০ শতাংশ সরকারি ল্যাবে হচ্ছে।

দেশে করোনা সংক্রমণের পর থেকে এখন পর্যন্ত সাত লাখ ১২ হাজার ৯৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে এক লাখ ৩৩ হাজার ৯৭৮ জন। অর্থাৎ মোট টেস্টের ১৮.৮১ শতাংশ পজিটিভ এসেছে।

এসব তথ্য তুলে ধরে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বিনা মূল্যে পরীক্ষা করার সুযোগ থাকায় এর অপব্যবহার হচ্ছে। প্রতিদিন যে পরিমাণ নমুনা পরীক্ষা হয়, তার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশের শরীরে ন্যূনতম উপসর্গ থাকে না।

এতে প্রকৃত আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষা করতে বিলম্ব হচ্ছে। তাঁরা জানান, পরীক্ষার ফির এই টাকা রাষ্ট্রের কোষাগারে চলে যাবে। সেই টাকা সরকার চাইলে স্বাস্থ্য খাতেই খরচ করতে পারবে।

‘টাকা নেওয়া কি সংবিধানসম্মত?’

তবে ফি নেওয়া ঠিক হবে না বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘অসম্ভব, হতেই পারে না। এখানে যদি টাকার বিষয়টা আসে, তাহলে দরিদ্র শ্রেণির মানুষ পরীক্ষা করাতে আসবে না। বড়লোকেরা যাদের দরকার, তারা আসবে।’ তিনি প্রশ্ন করেন, ‘টাকা নেওয়ার বিষয়টা কি আমাদের সংবিধানের সঙ্গে যায়?’

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019